আজকের এই ফাঁসির রায় আমাকে শুধু হতবাক করেনি—রেষায়িত করেছে।
এটা কি ন্যায়বিচার, নাকি ক্ষমতার সামনে সত্যকে চাপা দেওয়ার আরেকটা নির্মম উদাহরণ?
যে দেশে বিচার হওয়ার কথা নিরপেক্ষভাবে, সেখানে রায়ের আগেই যদি মানুষ বুঝে ফেলে সিদ্ধান্ত কোন দিকে যাবে—তাহলে সেটা বিচার নয়, সেটা প্রহসন।
আর এই প্রহসন যতবার ঘটে, ততবার মানুষ বিশ্বাস হারায়… রাষ্ট্রের ওপর, বিচারব্যবস্থার ওপর, নেতাদের ওপর।
মৃত্যুদণ্ড কোনও ভুলের সুযোগ রাখে না।
কিন্তু যখন বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তখন এমন রায় মানুষের হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করে। মনে হয়—সত্য, ন্যায়, মানবিকতা সবকিছু যেন এক অদৃশ্য শক্তির কাছে বন্দি হয়ে গেছে।
হ্যাঁ, আমি কঠোরভাবে বলছি:
ন্যায়বিচার যদি স্বচ্ছ না হয়, তাহলে তা ন্যায়বিচার নয়—এটা শুধু ক্ষমতার প্রদর্শন।
দেশটা কার? জনগণের।
বিচার কার জন্য? জনগণের।
তাহলে জনগণই যখন রায়ের ওপর আস্থা হারায়, তখন সেটা কি জাতির জন্য লজ্জার নয়?
এই সরকারের সাম্প্রতিক ফাঁসির রায় দেখে স্পষ্ট একটা কথা বলা ছাড়া উপায় নেই—
যেখানে বিচারব্যবস্থা ক্ষমতার ছায়ায় ঢেকে যায়, সেখানে ন্যায়বিচারের কথা বলা একটা নিষ্ঠুর ব্যঙ্গ ছাড়া আর কিছু নয়।
আজ যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তা মানুষের চোখে বিচার নয়—এটা সরকারের নিজের অবস্থান রক্ষা করার নাটক। সত্যি কথা বলতে কী, দেশে কি সত্যিই ন্যায়বিচার বেঁচে আছে? নাকি ক্ষমতার দরবারে তা গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে?
একটি সরকারের সবচেয়ে বড় শক্তি হওয়া উচিত জনগণের আস্থা।
কিন্তু যখন জনগণই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের অংশ মনে করে—তখন সেই সরকার যতই ক্ষমতা দেখাক, তার ভিত ভিতর থেকে ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়তে শুরু করেছে।
মৃত্যুদণ্ড এমন একটা রায়, যেখানে সামান্যতম সন্দেহও অগ্রহণযোগ্য।
কিন্তু এই সরকারের অধীনে অনেক রায়ই প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কিত এবং স্বচ্ছতার ঘাটতিতে ভরা।
মানুষ প্রশ্ন করছে, প্রতিবাদ করছে, আস্থা হারাচ্ছে—আর সরকার শুধু রায় চাপিয়ে দিয়ে ভাবছে সত্যকে চুপ করানো গেছে।
না, সত্য কখনো চুপ থাকে না।
জনগণও না।
আমি স্পষ্টভাবে বলছি—
একটা সরকার তখনই দুর্বল হয়, যখন ন্যায়বিচারের বদলে নিয়ন্ত্রণকে বেছে নেয়।
আর আজকের রায় সেই দুর্বলতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
দেশটা ব্যক্তিগত মালিকানায় নয়—
এটা জনগণের। আর জনগণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায়—ইতিহাস সে কথাই বলে।
এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান