সামাজিক কুসংস্কার ও শিক্ষা ঘাটতি

বাংলাদেশ একটি বহুসাংস্কৃতিক, বহু ধর্মাবলম্বীর দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুরা—বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো—বিভিন্ন সময়ে ভৌমিক হামলা, জমি দখল, রাজনৈতিক প্রতিশোধ এবং ধর্মীয় উগ্রতার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সংখ্যালঘু নির্যাতন সাধারণত নিম্নোক্ত রূপে দেখা যায়—

জমি দখল ও সম্পত্তি দখল ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা (মন্দির, গির্জা, বৌদ্ধ বিহার) হত্যা, মারধর ও ভীতি প্রদর্শন নারী ও কন্যাশিশুর ওপর সহিংসতা রাজনৈতিক প্রতিশোধমূলক হামলা সামাজিক বৈষম্য ও বঞ্চনা

সংখ্যালঘু নির্যাতনের পেছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে—

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দুর্বল আইন প্রয়োগ ধর্মীয় উগ্রপন্থা সামাজিক কুসংস্কার ও শিক্ষা ঘাটতি অর্থনৈতিক স্বার্থ (সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্য)রাষ্ট্র সংখ্যালঘু সুরক্ষায় আইনগত পদক্ষেপ নিলেও প্রয়োগের ঘাটতি প্রায়ই দেখা যায়। নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন এবং গণমাধ্যম এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

আইনের কঠোর প্রয়োগ

হামলাকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে কঠোর শাস্তি।

শিক্ষা ও সচেতনতা

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বহুত্ববাদের শিক্ষা জোরদার করা।

রাজনৈতিক সদিচ্ছা

সকল দলের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষায় দৃঢ় অবস্থান।

জরুরি সহায়তা ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা

হামলার পর পুনর্গঠন, নিরাপত্তা ও মানসিক সেবা নিশ্চিত করা।

সম্প্রতি (২০২৪-২০২৫) সময়ে — অর্থাৎ গত কিছু মাসে — বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান প্রভৃতি) বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া কিছু বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরছি। এগুলো এই ইস্যুটির মাত্রা, প্রকৃতি এবং সাম্প্রতিকতা নির্দেশ করে — যাতে আপনি “নির্যাতনের কথা শুধু পুরনো” বললে এ ধরনের ফ্যাক্ট দেখিয়ে বোঝা যায় এই সমস্যা এখনও আছে।

Bangladesh Hindu Buddhist Christian Unity Council (BHBCUC)-র রিপোর্ট (২০২৪-২০২৫) ওই কাউন্সিলের তথ্যমতে, ৪ আগস্ট ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত প্রায় ৪৩২টি ভৌত (violence) ঘটনা minority-দের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকছে — মন্দির বা পুজাস্থানে হামলা, বাড়ি/দোকান দখল/লুটপাট, ধর্মীয় ও সাংগঠনিক ভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হয়রানি।  

২০২৫ সালের জুলাইয়ে — 2025 Gangachara Hindu neighbourhood attack রংপুর জেলার গঙ্গাচড়ায় (Gangachara Upazila, Aldadpur Balapara গ্রাম) ২৬–২৭ জুলাই ২০২৫: একটি হিন্দু পরিবারের উপর হামলা, বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় ১৫–২০টি হিন্দু বাড়ি আক্রান্ত হয়, এবং অনেক পরিবার নিরাপত্তার কারণে এলাকাগুলো ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।  — এই ঘটনায় অভিযোগ করা হয় ধর্মীয় ভ্যুইষম্যের নামে আচরণ করা হয়েছে।  

২০২৪ সালের অগাস্ট–ডিসেম্বরে এবং ২০২৫ সালের প্রথম দিকে গণহিংসা-উদ্যোগ ও ভৌত হামলা BHBCUC-এর তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় ২,৪৪২টি ধর্মীয় সংঘর্ষ / communal violence-র ঘটনা রিপোর্ট করা হয়।  — রিপোর্টী ঘটনার মধ্যে ছিল — “হত্যা, যৌন হয়রানি, মন্দিরে হামলা, বাড়ি ও ব্যবসা দখল, ধর্মীয় বাক স্বাধীনতার নামে হয়রানি” — এবং আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা, কিশোর-কিশোরী, সবই ছিল।  নির্বিচারে বিচার ও প্রতিকার পাচ্ছে না, বিচারহীনতার অভিযোগ ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১,৪১৫টি রিপোর্ট করা ঘটনার মধ্যে ১,২৫৪টি “ভাইরিফায়েড (verified)” হয়েছে। কিন্তু পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এর প্রায় ৯৮% (১,২৩৪টি) ছিল “রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে” এবং মাত্র ২০টি ছিল প্রকৃত “সাম্প্রদায়িক (communal)” ঘটনা — যা সংখ্যালঘু কল্যাণ ও অধিকার সংগঠনগুলো ভিন্নমত পোষণ করে।  — সহজ কথায়: সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বা হামলা হলেও, অনেক সময় “রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট” বা “অভিযোগ” বলা হচ্ছে, যা অনেক পরিবারকে न्याय থেকে বঞ্চিত করছে।  

স্থান-ভৌগোলিক বিস্তার ও বৃহৎ মাপকাঠি BHBCUC এবং অন্যান্য রিপোর্ট অনুসারে, এই হামলা/নির্যাতন শুধু একটি জেলা বা কয়েকটি জায়গায় সীমাবদ্ধ নয় — প্রায় সারাদেশে, অনেক বিভাগ ও জেলার (যেমন : চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, যশোর, নড়াইল প্রভৃতি) একাধিক ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় betroffen হয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে কখনোই দেশের অবস্থা এমন ছিল না”—

২০০৯–২০২৩ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় জুড়ে মন্দির, বৌদ্ধ বিহার, গির্জা ও সংখ্যালঘু বাড়িতে বড় আকারের সহিংসতা খুব বেশি দেখা যেত না। স্থানীয় পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও রাষ্ট্রীয় দমন, পুলিশি নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক অবস্থান ছিল তুলনামূলকভাবে শক্ত।আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০১0 দশক জুড়ে অপরাধ, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমন স্থিতিশীল ছিল। বড় ধরনের দাঙ্গা বা সারাদেশে বিস্তৃত সাম্প্রদায়িক টেনশন খুব কমই দেখা গেছে।অনেক সংখ্যালঘু সংগঠন নিজেরাই বলেছে—

উৎসব-পার্বণ পালনে বেশি স্বাধীনতা ছিল। পূজা, বড়দিন, বৌদ্ধ পূর্ণিমা ইত্যাদিতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা মিলত। হামলা হলে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতো।আওয়ামী লীগ সরকার ঐতিহাসিকভাবে—ধর্মনিরপেক্ষতা’, ‘বৈচিত্র্যকে সম্মান’, এবং ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’এই নীতিগুলোতে জোর দিয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক শান্তি বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে।

সাম্প্রতিক সময়ের—সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ, জমি দখল, রাজনৈতিক প্রতিশোধ, আইনশৃঙ্খলার পত—এসব দেখা যায়, তখন সহজেই বলা যায়: “আগের মতো নয় — এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন, অনেকটাই অস্থির”

আমরা চাই আওয়ামী লীগ আবার দেশ শাসন করুক।

গত কয়েক দশকে তারা দেশের স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, শিক্ষা, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

রাষ্ট্র পরিচালনায় অভিজ্ঞতা, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং উন্নয়নমুখী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য আমরা মনে করি—

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রয়োজন রয়েছে।

দেশের অর্থনীতি, কূটনীতি, সামাজিক সম্প্রীতি এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যায়—

সেজন্যই আমরা চাই আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসে দেশকে নেতৃত্ব দিক।

Posted in

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান